৪ সপ্তাহেও আসেনি আমদানির ডিম, আবারও বাড়ছে দাম

ডিম

ঢাকার বাজারগুলোতে এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতিটি ডিমের দাম ১২ টাকা থেকে বেড়ে সর্বোচ্চ ১৩.৭৫ টাকা পর্যন্ত দামে বিক্রি হচ্ছে। অথচ সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণে প্রতিটি ডিমের দাম ১২ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছিল।

অনুমতি দেওয়ার ৪ সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও আমদানি করা ডিম দেশে আসেনি। এই অবস্থায় আবারও বাড়তে শুরু করেছে ডিমের দাম।

ঢাকার বাজারগুলোতে এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতিটি ডিমের দাম ১২ টাকা থেকে বেড়ে সর্বোচ্চ ১৩.৭৫ টাকা পর্যন্ত দামে বিক্রি হচ্ছে। অথচ সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণে প্রতিটি ডিমের দাম ১২ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছিল।

ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সরকার ডিম আমদানির অনুমতি দেয়া শুরু করে ১৮ সেপ্টেম্বর। তিন ধাপে ১৫টি প্রতিষ্ঠানকে ১৫ কোটি ডিম আমদানির অনুমতি দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। সে সময় আমদানির খবরে বাজারে ডিমের দাম কমতেও শুরু করে। কিন্তু প্রায় এক মাসেও যখন ডিম আসেনি, তখন ব্যবসায়ীরা সরবরাহ সংকটের দাবি তুলে বাজারে অস্থিরতা তৈরি করছে।

রবিবার রাজধানীর ধানমন্ডির ১৫ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর কার্যালয়ের সামনে ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) ফ্যামিলি কার্ডে ভর্তুকি মূল্যে পণ্য বিতরণের উদ্বোধন করেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।

এ সময় তিনি বলেন, ডিমের সরবরাহ বৃদ্ধি ও বাজারদর স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে ইতোমধ্যে ১৫ কোটি ডিম আমদানির জন্য ১৫টি প্রতিষ্ঠানকে অনুমতি দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৭টি প্রতিষ্ঠান এলসি খুলেছে। আশা করা হচ্ছে তিন-চার দিনের মধ্যেই ডিম আমদানির প্রথম চালান দেশে প্রবেশ করবে।

বাণিজ্যমন্ত্রী জানান, আমদানিকৃত ডিমের প্রতিটি চালানের জন্য বেশ কিছু শর্ত আরোপ করা হয়েছে। যার মধ্যে একটি হলো রপ্তানিকারক দেশের সরকার কর্তৃক এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা বা বার্ড ফ্লু ভাইরাস ও ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া মুক্ত মর্মে সনদ দাখিল করতে হবে। দেশে এর আগে ডিম আমদানি না হওয়ায় এই সনদ পেতে আমদানিকারদের কিছুটা সময় লাগায় ডিম আসতে দেরি হচ্ছে।

খামারিরা বলছেন, করোনা পরবর্তী সময় থেকে শুরু করে বর্তমান সময় পর্যন্ত লোকসানের কারণে অনেক খামারিই উৎপাদন বন্ধ করে দিয়েছে। এ কারণে প্রতিদিনের ডিমের উৎপাদন দুই বছরের ব্যবধানে নেমেছে ৪ কোটি পিসের নিচে; যা ২০২১-২২ অর্থবছরেও ছিল ৬ কোটি পিসের বেশি।

এদিকে শাকসবজি থেকে শুরু করে মাছ, মাংস সবকিছুর দামই চড়া। এ মাসের প্রথম সপ্তাহে তিন দিনের ভারী বৃষ্টির পর থেকে প্রায় সব ধরনের সবজির দামই এখন ১০০ টাকা বা তারও বেশি। এতে ডিমের উপর বাড়তি চাপ তৈরি হয়েছে। এই অবস্থায় ডিমের দাম বেড়েছে।

কারওয়ানবাজারের জনতা আড়তের মালিক নুরুল ইসলাম টিবিএসকে বলেন, ‘সবজির দাম বেড়ে যাওয়ায় ডিমের বাড়তি চাহিদা তৈরি হয়েছে। কিন্তু সে অনুযায়ী সরবরাহ নেই। এ কারণে দাম বেড়েছে।’

তবে পাইকারিতে দুদিন আগে ১২.১০ পয়সায় প্রতিটি ডিম বিক্রি হলেও এখন সেটা কমে ১১.৮০ টাকায় নেমেছে বলেও জানান তিনি।

এদিকে দুই-তিন দিন আগেও সুপারশপগুলোতে ১২ টাকা করে ডিম বিক্রি হয়েছে। বাজারে দাম বেড়ে যাওয়ায় তারাও আর সরকার নির্ধারিত দামে ডিম বিক্রি করছে না। রবিবার দেখা যায়, স্বপ্ন ও মীনা বাজার প্রতিটি ডিম ১২.৭৫ টাকা এবং আগোরা প্রতিটি ডিম ১৩ টাকায় বিক্রি করছে।

ঢাকায় ১২ টাকায় ডিম বিক্রি শুরু হচ্ছে আজ

ঢাকার ২০টি স্থানে সরকার নির্ধারিত ১২ টাকা দামে ডিম বিক্রি করার পরিকল্পনা করছে খামারিরা। সোমবার কারওয়ান বাজারে ট্রাকসেলের উদ্বোধন করবে বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ)।

বিপিএর এর সভাপতি সুমন হাওলাদার টিবিএসকে বলেন, ‘উদ্বোধনের দিন একটি স্পটে ডিম বিক্রি করা হবে। আগামী শুক্রবারের মধ্যে ঢাকার ২০টি স্থানে ট্রাকসেলের মাধ্যমে ডিম বিক্রি করা হবে।’

বিপিএ বলছে, বাজারে এখন সবচেয়ে বেশি লাভ করছে খুচরা বিক্রেতারা। প্রতিটি ডিমে তারা ১.৫ টাকার বেশি লাভ করছে। যে কারণে সরকার নির্ধারিত দামে ডিম পাচ্ছে না ভোক্তারা।

ঢাকার ২০টি স্থানে ১২ টাকায় ডিম বিক্রি শুরু হলে খুচরা বাজারেও দাম কমে আসবে বলে মনে করেন সুমন হাওলাদার।

জানা গেছে, প্রতিটি মিনি ট্রাকে ৪০ হাজার করে ডিম বিক্রি করা হবে।

শেয়ার করুন:-

বিজ্ঞাপন

সম্পর্কিত খবর