তামিম আর বরিশালকে আক্ষেপে পুড়িয়ে দারুণ জয় চট্টগ্রামের

শুরুর ধাক্কা সামলে একপ্রান্ত আগলে রেখে দলকে জয়ের পথে নিয়ে যাচ্ছিলেন অধিনায়ক তামিম ইকবাল। তবে পেসার শহিদুল ইসলামের এক ওভারেই কূল কিনারা হারিয়ে ফেলে তিনি ও তার দল ফরচুন বরিশাল। এক রানের আক্ষেপ নিয়ে তামিমের আউটের পর ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় বরিশালও।

তাতে এক ম্যাচ পর আবারও জয়ে ফিরে প্লে অফের পথে আরও একধাপ এগিয়ে গেল চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স।

মিরপুরে মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বিপিএলের ২২তম ম্যাচে ১৬ রানের দারুণ এক জয় পেয়েছে শুভাগত হোমের দল। এদিন ১৪৬ রান তাড়া করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৮ উইকেট হারিয়ে ১২৯ রান তুলতে সক্ষম হয় বরিশাল। ৪৯ রানে আউট হন তামিম ইকবাল। ৪ ওভার বল করে ১ মেডেনসহ মাত্র ১৩ রান খরচায় ৩ উইকেট তুলে নেন শহিদুল।

১৪ ওভার শেষে ৪ উইকেট হারিয়ে সংগ্রহ ৯০ রান। ক্রিজে ৪৩ বলে ৪৯ রানে অপরাজিত থাকা তামিমের সঙ্গী ছিলেন পাকিস্তানের অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার শোয়েব মালিক। তিনি ৬ বলে ৯ রানে অপরাজিত ছিলেন। জয়ের জন্য তখন বরিশালের প্রয়োজন ছিল ৩৬ বলে ৫৬ রান। কিন্তু এমন ম্যাচও ফসকে গেছে তামিমদের হাত থেকে।

১৫তম ওভারে আক্রমণে এসে তাদের ছিটকে দিয়েছেন পেসার শহিদুল ইসলাম। তার প্রথম দুই ডেলিভারিতে রান করতে ব্যর্থ হয়ে তৃতীয় বলে এগিয়ে এসে তুলে মারার চেষ্টা করেন তামিম। কিন্তু ঠিকঠাক সংযোগ না হওয়ায় টপ এজ হয়ে ধরা পড়েন শর্ট থার্ড ম্যান অঞ্চলে থাকা ফিল্ডার সৈকত আলীর হাতে। তাতে চলতি আসরে প্রথম ফিফটির দ্বারপ্রান্তে থেকেও ১ রানের আক্ষেপ নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় তামিমকে। শহিদুলের পরের তিন বলে রান নিতে পারেননি অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদও।

পরের ওভারে বিলাল খানের ওভারে ৬ রানের বেশি তুলতে পারেননি শোয়েব ও মাহমুদউল্লাহ। তাতে শেষ ৪ ওভারে দরকার পড়ে ৫০ রান। কিন্তু চট্টগ্রামের বোলারদের তোপে ১৭, ১৮ ও ১৯ এ তিন ওভারে ২১ রানের বেশি তুলতে ব্যর্থ হয় বরিশাল। ১৭তম ওভারে আক্রমণে এসে মাত্র ৭ রান দিয়ে শোয়েবের উইকেট তুলে নেন নিহাদুজ্জামান। এ স্পিনারের বল আকাশে তুলে তার হাতেই ধরা পড়েন মালিক। ১২ বলে ১৪ রানে থামে তার ইনিংস। ১৮তম ওভারে আক্রমণে এসে মাত্র ৭ রান দেন বিলাল খান। পরের ওভারে শহিদুল থেকে ৭ রানের বেশি আদায় করতে পারেনি বরিশাল। উল্টো ওভারের পঞ্চম ও ষষ্ঠ বলে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও আব্বাস আফ্রিদির উইকেট হারিয়ে বসে তারা। ৮ বলে ৩ রান করে ১আউট হন মাহমুদউল্লাহ।

শেষদিকে ক্রিজে নেমে ২ ছক্কা ও ২ চারে ১৮ বলে ৩০ রানে অপরাজিত থাকেন ৯ মাস পর মাঠে নামা মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। কিন্তু প্রয়োজনীয় রানের তুলনায় তার ইনিংস যথেষ্ট ছিল না। দল হেরে যায় ১৬ রানে।

এদিন স্বল্প রান তাড়ায় নেমে ২৯ রানের মধ্যে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়েছিল বরিশাল। ১৭ বলে ১৬ রান করে আহমেদ শেহজাদ আউটের পর রানের খাতা না খুলেই মাঠ ছাড়েন সৌম্য সরকার ও মেহেদী হাসান মিরাজ। এরপর ক্রিজে নেমে সুবিধা করতে পারেননি অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিমও। ১৩ বলে ৯ রান করে মাঠ ছাড়েন তিনি। একপ্রান্ত আগলে রেখে দলকে লড়াইয়ে রাখেন তামিম। ১৪তম ওভার পর্যন্ত তার লড়াইয়ে জয়ের পথেই হাঁটছিল বরিশাল। কিন্তু তার বিদায়ের পর শহিদুল-বিলালদের দারুণ বোলিংয়ে বাকিরা দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছেন।

এদিন প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৪৫ রান সংগ্রহ করে শুভাগত হোমের দল। দলকে লড়াকু পুঁজি এনে দেয়ার পথে গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেন দুই বিদেশি জশ ব্রাউন ও টম ব্রুস। ব্রাউন ৩৮ রান করে আউট হলেও ৫০ রানে অপরাজিত থাকেন ব্রুস।

বরিশালের পক্ষে ৩১ রান খরচায় সর্বোচ্চ ২ উইকেট নিয়েছেন মোহাম্মদ ইমরান। ২৪ রান খরচায় ১ উইকেট নিয়েছেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন।

৭ ম্যাচ শেষে ১০ পয়েন্ট টেবিলের দুইয়ে অবস্থান করছে চট্টগ্রাম। সমান ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে প্লে অফের দৌড় থেকে অনেকটা পিছিয়ে পড়েছে বরিশাল।

শেয়ার করুন:-

বিজ্ঞাপন

সম্পর্কিত খবর