ডিএসইর ফিক্স সার্টিফিকেশন পেল চার ব্রোকারেজ হাউজ

৭১ বছরে পদার্পণ করল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ পিএলসি। পুঁজিবাজারের ইতিহাসে আজকের দিনটি খুবই অর্থবহ ও গৌরবের৷ ডিএসইর ৭১ বছরে পদার্পণ উপলক্ষে চারটি ব্রোকারেজ হাউজকে ডিএসইর ফিক্স সার্টিফিকেশন প্রদান করেছে প্রতিষ্ঠানটি।

রোববার (২৮ এপ্রিল) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের বোর্ড রুমে ব্রোকারেজ হাউজগুলোকে ফিক্স সার্টিফিকেশন প্রদান করেন ডিএসইর প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা ও প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা (ইনচার্জ) সাত্বিক আহমেদ শাহ।

ব্রোকারেজ হাউজগুলো হলো- প্রোডেনশিয়াল ক্যাপিটাল লিমিটেড, রিলিফ এক্সচেঞ্জ লিমিটেড, রয়েল ক্যাপিটাল লিমিটেড এবং শেলটেক ব্রোকারেজ লিমিটেড।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আইসিটি ডিভিশনের জেনারেল ম্যানেজার ও সিটিও (ইনচার্জ) মো. তারিকুল ইসলাম, ডিএসইর উপ-মহাব্যবস্থাপক সাইয়িদ মাহমুদ জুবায়ের, আইসিটি ডিভিশনের উপ-মহাব্যবস্থাপক হাসানুল করিম, প্রোডেনশিয়াল ক্যাপিটাল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রেজাউল ইসলাম, রিলিফ এক্সচেঞ্জ লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তানজির নেওয়াজ খান, রয়েল ক্যাপিটাল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম. মনির আহমেদ এবং শেলটেক ব্রোকারেজ লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মেজবাহ উদ্দিন খান।

সাত্বিক আহমেদ শাহ বলেন, ডিএসইর ৭১ বছরে পদার্পণে আমি প্রতিষ্ঠানটির প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা হিসেবে চারটি ব্রোকারেজ হাউজকে ডিএসইর ফিক্স সার্টিফিকেশন প্রদান করতে পেরে আনন্দিত৷ এ জন্য নিজেকে গর্বিত মনে করছি। ১৯৭১ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। ৭১ সংখ্যাটা আমাদের অন্তরের সঙ্গে গেঁথে রয়েছে৷ এই ৭১ বছরে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ সনাতনী ক্রাইআউট থেকে অটোমেশন, অটোমেশন পরবর্তী সিডিএস, সিডিএস পরবর্তী ডিমিউচুয়ালাইজেশন হয়ে অত্যাধুনিক স্টক এক্সচেঞ্জে পরিণত হয়েছে। স্টক এক্সচেঞ্জটির ৭১ বছর পদার্পণকে কেন্দ্র করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতেৃত্বে ‘স্মার্ট পুঁজিবাজার’ রূপান্তর করব- এটাই আমাদের প্রত্যাশা। আধুনিক স্টক এক্সচেঞ্জের সাথে তাল মিলিয়ে ব্রোকারেজ হাউজগুলো যদি পর্যায়ক্রমে এপিআই সংযোগের মাধ্যমে নিজস্ব ওএমএস চালু করে তাহলে গ্রাহক সেবার মান অধিকতর উন্নতি হবে। যা পুঁজিবাজার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের পর ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার প্রত্যয়ের সাথে তাল মিলিয়ে পুঁজিবাজারে সার্বিক উন্নয়নে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার আমাদের বিশেষ অঙ্গীকার। সে লক্ষ্যেই দেশের পুঁজিবাজারকে ডিজিটাল পুঁজিবাজার থেকে স্মার্ট পুঁজিবাজার হিসেবে গড়ে তোলা হবে। আমরা সব সময় মনে করি শেয়ারবাজার যদি তার প্রাথমিক লক্ষ্যগুলো অর্জন করতে চায়, সেক্ষেত্রে উন্নত ডিজিটালাইজেশনের বিকল্প কিছু নেই। এ বিষয়টি প্রথম থেকেই আমরা গুরুত্ব দিয়ে আসছি। ফিক্স সার্টিফিকেশনের এই বিষয়টি আমাদের অনেকদূর এগিয়ে নিয়ে যাবে এবং একটি দক্ষ পুঁজিবাজার গড়ে উঠবে।

মার্কেট ডেভেলপমেন্ট ডিভিশনের পক্ষে উপ-মহাব্যবস্থাপক সাইয়িদ মাহমুদ জুবায়ের স্বাগত বক্তব্যে বলেন, একজন নতুন ট্রেকহোল্ডার নিজস্ব ওএমএসের মাধ্যমে ট্রেড পরিচালনা করতে যাচ্ছে, যা অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ ২০২১ সাল থেকে এপিআই ভিত্তিক (বিএইচওএমএস) চালুর উদ্যোগ গ্রহণ করে। এরই প্রেক্ষিতে ৫২টি ব্রোকারেজ হাউজ নাসডাক ম্যাচিং ইঞ্জিনে এপিআই সংযোগ নিয়ে নিজস্ব অর্ডার ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের মাধ্যমে লেনদেন করার জন্য ডিএসইতে আবেদন করে। ইতোমধ্যে ৯টি ব্রোকারেজ হাউজ ফিক্স সার্টিফিকেশন গ্রহণ করেছে এবং ৬টি ব্রোকার হাউজ নিজস্ব অর্ডার ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের মাধ্যমে লেনদেনও শুরু করেছে।

আইসিটি বিভাগের পক্ষে উপ-মহাব্যবস্থাপক এ এন এম হাসানুল করিম স্বাগত বক্তব্যে বলেন, তিনি উন্নত বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে নিজস্ব ওএমএস চালু করায় সাধুবাদ জানিয়ে যথাযথ বিজনেস ও আইসিটি কমপ্লাইয়েন্স মেনে চলার অনুরোধ জানান।

তিনি আরো বলেন, এই সার্টিফিকেশন প্রদানের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট ট্রেকের ওএমএস এক ধাপ এগিয়ে মূল ট্রেডিং সিস্টেম এ ট্রেড করার যোগ্যতা অর্জন করলেও সিস্টেমটি সঠিকভাবে পরিচালনার ক্ষেত্রে অনেক বেশি যত্নশীল থাকতে হবে।

আইসিটি ডিভিশনের জেনারেল ম্যানেজার ও সিটিও (ইনচার্জ) মো. তারিকুল ইসলাম বলেন, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের যে সেন্ট্রাল অর্ডার ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (ওএমএস) রয়েছে সেখানে নির্দিষ্ট কিছু ফিচার কাঠামো রয়েছে। এটা সকল ব্যবহারকারীর জন্য সমান। ব্রোকার হোস্টেড অর্ডার ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (ওএমএস) এর মাধ্যমে একজন ব্রোকার তার বিনিয়োগকারীদের নিজের সুবিধামত ভ্যালু এডেড সার্ভিস নিশ্চিত করতে পারে।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা ও প্রধান পরিচালন কর্মকর্তার (ভারপ্রাপ্ত) কাছ থেকে সার্টিফিকেট গ্রহণ করেন প্রোডেনশিয়াল ক্যাপিটাল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রেজাউল ইসলাম, রিলিফ এক্সচেঞ্জ লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তানজির নেওয়াজ খান, রয়েল ক্যাপিটাল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম. মনির আহমেদ এবং শেলটেক ব্রোকারেজ লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মেজবাহ উদ্দিন খান।

এছাড়া আরও বক্তব্য রাখেন ফিক্স সার্টিফিকেশন প্রাপ্ত ব্রোকারেজ হাউজ ও ভেন্ডর কোম্পানি কুয়ান্ট ফিনটেক লিমিটেড এবং নিরুপন লিমিটেডের প্রতিনিধিবৃন্দ।

শেয়ার করুন:-

বিজ্ঞাপন

সম্পর্কিত খবর