খেলাপি ঋণ কমাতে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে কর্ম পরিকল্পনা তৈরির নির্দেশ

bb

রোববার (১৫ অক্টোবর) বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে প্রথম দফায় সাতটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সঙ্গে বৈঠক করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ওই বৈঠকে এই বার্তা দিয়েছেন সংস্থাটির ডেপুটি গভর্নর কাজী সাইদুর রহমান।

মূলধন ঘাটতি ও খেলাপি ঋণ কমাতে ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্ম পরিকল্পনা জানতে চেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। একইসঙ্গে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে কর্ম পরিকল্পনা বাস্তবায়নের উন্নতি দেখাতেও প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের এই নিয়ন্ত্রক সংস্থা।

ঋণ অনিয়মসহ বিভিন্ন কারণে এখন দুরবস্থায় থাকা দেশের ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ঋণ ফেরত পাচ্ছে না। তাই বেড়ে যাচ্ছে খেলাপি ঋণ; একইসঙ্গে বাড়ছে মূলধন ঘাটতি। এ কারণেই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এমন নির্দেশনা এসেছে।

রোববার (১৫ অক্টোবর) বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে প্রথম দফায় সাতটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সঙ্গে বৈঠক করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ওই বৈঠকে এই বার্তা দিয়েছেন সংস্থাটির ডেপুটি গভর্নর কাজী সাইদুর রহমান। বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের নির্বাহী পরিচালক, পরিচালক এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক জানান, “দ্রুত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর আর্থিক উন্নয়ন পরিকল্পনা চাওয়া হয়েছে। যাতে করে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই মূলধন ঘাটতি ও খেলাপি ঋণ কমে আসে।”

“বৈঠকে সাতটি প্রতিষ্ঠানকে নিজ নিজ কোম্পানির মূলধন সংরক্ষণ পরিকল্পনা জমা দেওয়ার তাগিদ দেওয়া হয়েছে। খুব শীঘ্রই বাকি আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে এই নির্দেশনার আওতায় নিয়ে আসা হবে। যদিও কয়েকটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মূলধন সংকট নেই,” বলেন মুখপাত্র।

তিনি আরও জানান, এক একটি প্রতিষ্ঠানের সমস্যা এক এক রকমের। তাই সমস্যা সমাধানের পরিকল্পনাগুলো তাদের কাছে থেকেই আসা উচিত। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে দৃশ্যমান উন্নতি দেখতে চেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

এর আগে, গত ২৭ আগস্ট আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক সভায় জানানো হয়, দেশের ৩৫টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৫টিতে খেলাপি ঋণ ৩২ শতাংশের বেশি। এ পরিস্থিতিতে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বাংলাদেশ ব্যাংক আমানতকারীদের অর্থ ফেরত দেওয়াকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়ার নির্দেশ দেয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, মার্চ থেকে জুন পর্যন্ত ৩ মাসে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোয় খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৯৬ কোটি টাকা। এই খাতে জুনের শেষে মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়ায় ১৯ হাজার ৯৫১ কোটি টাকা, যা বিতরণ করা মোট ঋণের ২৭ দশমিক ৬৫ শতাংশ।

বর্তমানে ৩৫টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৬টি প্রতিষ্ঠনের খেলাপি ঋণ ৮০ শতাংশের বেশি।

আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা জানান, কিছুদিন আগে ব্যাংকগুলোকে বাংলাদেশ ব্যাংক একটি সুবিধা দিয়েছে। তাতে ঋণের কিস্তির অর্ধেক টাকা পরিশোধ করলে কোনো গ্রাহক ঋণ খেলাপি হবেন না। কিন্তু আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে এ ধরনের সুবিধা রাখা হয়নি। ফলে আর্থিক প্রতিষ্ঠানে খেলাপি ঋণ বেড়েছে।

এছাড়া, অনিয়মের কারণে ভাবমূর্তি নষ্ট হওয়ায় আমানত পেতে সমস্যা হচ্ছে। পাশাপাশি ঋণগ্রহীতাদের ব্যবসা-বাণিজ্য খারাপ থাকার কারণে অনেকে সময়মতো ঋণ পরিশোধ করতে পারেনি। তাই ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণ বেড়েছে বলে উল্লেখ করেন তারা।

শেয়ার করুন:-

বিজ্ঞাপন

সম্পর্কিত খবর